জমি বাটোয়ারা বা বন্টননামা দলিল কম খরছে কীভাবে করবেন জেনে নিন।

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। ১৯৭১ সালের পর থেকে আমরা স্বাধীন জাতী হিসেবে বাংলাদেশে বসবাস করতেছি। তবে আমাদের বসসবাস এর জায়গা সম্পত্তি পূর্বের বিটিশ/পাকিস্থানী আমলের হয়ে বাংলাদেশে এসেছে। এই কাগজ পত্র অনুযায়ী আমাদের জমি জামা বন্টন হয়ে থাকে। বণ্টন বা বাটোয়ারা দলিল এর মাধ্যমে সাধারনত এই বণ্টন নামা হয়ে থাকে।

কম খরচে যেভাবে বাটোয়ারা দলিল করবেন জেনে জানতে ক্লিক করুণ এখানে

বাবা মা মারা যাওয়ার পর আমাদের সমাজে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বিভাদ লেগে থাকে মূলত এই জমি জামা কারনে। কখোনো কখোনো এই জমি জামা মামলা মকাদ্ধমা মাধ্যমে ও নিশপ্ততি হতে দীঘ সময় লেগে যায়। তবে কিছু সহজ পব্ধতি আছে, যাহাতে আপনি সহজেই এই সব জামেলা দূর করতে পারেন। আসুন আমরা মূলত সেইসব বিষয়গুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করবো। আশা করি এতে করে নিজেদের ও পরিবারের মধ্যে বন্ধন আরো শক্তিশালী হবে।

আরো দেখুনঃ 

জমির মালিকানা অনলাইনে সঠিকভাবে যাচাই করুন ২০২৩ ভূমি মন্ত্রণালয়

জমির খতিয়ান (ই-পর্চা) ডাউনলোড করুন বিনামূল্যে। eporcha gov bd

জমি বাটোয়ারা বা বন্টননামা দলিল কম খরছে কীভাবে করবেন জেনে নিন।

[জন্ম সনদ] অনলাইন নিবন্ধন, সংশোধন, ভেরিফাই ও ডাউনলোডের নতুন নিয়ম ২০২৩ঃ bdris.gov.bd

ভূমি নতুন ডিজিটাল সার্ভে (BDS) ২০২৩ জরিপকালে জমির মালিকের যা যা লাগবে

ই-নামজারি আবেদন যাচাই করুন অনলাইনে-ভূমি মন্ত্রণালয় land gov bd

বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিল কীভাবে করবেন ?

আজকে এখানে মূলত বাটোয়ার দলিল কিভাবে করা যায় এবং খরচ কেমন পডে তা নিয়ে মূলতঁ আলোচনা করবো। বাংলাদেশে যতো জমিজমা নিয়ে মামলা হয় এর অনেকাংশ মামলা হয়ে থাকে শুধুমাত্র এই বাটোয়ারা জনিত কারনে। তাই প্রত্যকেরি করনীয় ওয়ারিশি সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারার সময় একটি বাটোয়ারা দলিল করে নেওয়া। চলুন প্রথমেই দেখি বাটোয়ারা দলিল কি কি কাজে লাগেঃ

আরো দেখুনল [জন্ম সনদ] অনলাইন নিবন্ধন, সংশোধন, ভেরিফাই ও ডাউনলোডের নতুন নিয়ম ২০২৩ঃ bdris.gov.bd

১. অংশীদারগণের মধ্যে ওয়ারিশি সম্পত্তি বন্টনের একটি লিখিত প্রমান হিসাবে বাটোয়ারা দলিল কাজে লাগে ।বাটোয়ারা দলিল বন্টনের একটি লিখিত প্রমান হিসাবে থাকে এতে ভবিষ্যতে যে কোন অংশিদার পুর্বের বন্টন মানতে বাধ্য থাকে।
২. ওয়ারিশি সম্পত্তির নামজারি করতে বন্টন দলিলের প্রয়োজন হয়।
৩. ওয়ারিশি জমি বিক্রি করতে গেলে বন্টন দলিলের প্রয়োজন হয়।
৪. ভূমি জরিপকালীন সময়ে ওয়ারিশি সম্পত্তিতে রেকর্ড করাতে।
৫. ওয়ারিশি জমির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে লোন করাতে গেলে।
৬. অংশীদারগণের মধ্যে ভবিষ্যতে মামলা মকদ্দমা হওয়া থেকে বাচা যায়। এছাড়া আরো নানা কারনে আপনাদের বন্টন বা বাটোয়ারা দলিলের প্রয়োজন হতে পারে ।

বন্টন দলিল করার জন্য কি কি লাগবে জেনে নিন

১. যে ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করা হবে উক্ত ব্যক্তির মৃত্যু সনদ লাগবে।
২. মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগণের প্রমান হিসাবে ওয়ারিশ সনদ লাগবে।
৩. মৃত ব্যক্তির যে সম্পত্তি বন্টন হবে উক্ত সম্পত্তির দলিল লাগবে।
৪. মৃত ব্যক্তির যে সকল ওয়ারিশ সম্পত্তির মালিক হবে স সকল ওয়ারিশের সম্মতি থাকতে হবে

বাটোয়ারা দলিল করার প্রক্রিয়াগুলোঃ

১. একটি বন্টন দলিল করার সকল প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো থাকলে প্রথমে আপনারা একজন দক্ষ দলিল লিখক বা একজন দক্ষ আইনজীবীর কাছে যাবেন।
২. সেখানে গিয়ে মৃত ব্যক্তির পূর্বের দলিলগুলো তাকে প্রদান করবেন এবং একটি বন্টন দলিল লিখার জন্য বলবেন।
৩. দলিল লিখক/আইনজীবী প্রথমে মৃত ব্যক্তির পূর্বের দলিলগুলো দেখে এবং সমন্বয় করে একটি নতুন বন্টন দলিল লিখবেন।
৪. এবার উক্ত দলিলটি নিয়ে ওয়ারিশগণ সংশ্লিষ্ট সাবরেজিস্ট্রি অফিসে যাবেন, সেখানে গিয়ে বাটোয়ারা দলিলের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে।
৫. এবার দলিলের সকল অংশীদারগণ সাবরেজিস্ট্রারের সম্মুখে রজিস্ট্রি বলিউমে স্বাক্ষর করবেন।
৬. এর পরে সাবরেজিস্ট্রার উক্ত দলিলটি রেজিস্ট্রি করে নিবেন ।
আপনারা চাইলে উক্ত বাটোয়ারা দলিলের একটি অবিকল নকল দলিল তখন নিয়ে নিতে পারেন। তো এইভাবেই খুব সহজেই সম্পাদিত হবে একটি আপোষমূলে বাটোয়ারা দলিল। বন্টননামা (Partition) বা বাটোয়ারা দলিলের রেজিস্ট্রি খরচসহ অন্যান্য তথ্য এবার নিচে থেকে জেনে নেওয়া যাক।

আরো দেখুনঃ ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান অনলাইনে। খাজনা যাচাই করুণ ldtax gov bd

বন্টননামা দলিলের ক্ষেত্রে রেজিষ্ট্রেশন ও আনুষঙ্গিক খরচ কি ?

রেজিস্ট্রেশন ফিসঃ ২০২৩ থেকে এই ফি ২% পাডতে পারে।
(ক) বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনুর্ধ ৩ লক্ষ টাকা হলে ৫০০ টাকা (রেজিস্ট্রেশন আইন-১৯০৮, এর ধারা ৭৮বি (১) অনুসারে)।
(খ) বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনুর্ধ ১০ লক্ষ টাকা হলে ৭০০ টাকা (রেজিস্ট্রেশন আইন-১৯০৮, এর ধারা ৭৮বি (২) অনুসারে)।
(গ) বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনুর্ধ ৩০ লক্ষ টাকা হলে ১২০০ টাকা (রেজিস্ট্রেশন আইন-১৯০৮, এর ধারা ৭৮বি (৩) অনুসারে)।
(ঘ) বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনুর্ধ ৫০ লক্ষ টাকা হলে ১৮০০ টাকা (রেজিস্ট্রেশন আইন-১৯০৮, এর ধারা ৭৮বি (৪) অনুসারে)।
(ঙ) বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য ৫০ লক্ষ টাকার উর্ধে হলে ২০০০ টাকা (রেজিস্ট্রেশন আইন-১৯০৮, এর ধারা ৭৮বি (৫) অনুসারে)।
রেজিস্ট্রেশন ফি পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানীয় সোনালী ব্যাংক লিঃ এ, কোড নং ১৪২২২০১ তে জমা করতে হবে (পুরাতন কোড ১৮২৬)।
স্টাম্প শূল্কঃ ৫০ টাকা (১৮৯৯ সালের স্টাম্প আইনের ১ নম্বর তফশিলের ৪৫ নম্বর ক্রমিকে উল্লিখিত বর্ণনা অনুসারে)।
এছাড়া
১। ২০০ টাকার স্টাম্পে হলফনামা।
২। ই- ফিঃ- ১০০ টাকা।
৩। এন- ফিঃ-
(!) বাংলায় প্রতি ৩০০ (তিন শত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ১৬ টাকা।
(!!) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ (তিন শত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
৪। (নকলনবিশগনের পারিশ্রমিক) এনএন ফিসঃ-
(!) বাংলায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
(!!) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ৩৬ টাকা।
৫। সম্পত্তি হস্তান্তর নোটিশের আবেদনপত্রে ১০ টাকা মূল্যের কোর্ট ফি।
মন্তব্যঃ-
১। এন- ফি ও ই- ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি এর সাথে একত্রে পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১৪২২২০১ তে জমা করতে হবে (পুরাতন কোড ১৮২৬)।
২। এনএন- ফি নগদে রেজিস্ট্রি অফিসে জমা করতে হবে।
৩। সরকার নির্ধারিত হলফনামা, ২০০ টাকার স্টাম্পে প্রিন্ট করে মূল দলিলের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
বিঃদ্রঃ ১। ওয়ারিশী স্হাবর সম্পত্তি ব্যতিত অন্যভাবে অর্জিত স্হাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত বন্টন নামা দলিলের ক্ষেত্রে উৎস কর প্রযোজ্য।
২। রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ১৪৩ বি, ধারা মোতাবেক কোন রেকর্ডীয় মালিক মৃত্যুবরণ করলে তাঁর জীবিত ওয়ারিশগণ নিজেদের মধ্যে একটি বন্টননামা দলিল সম্পাদন করে রেজিস্ট্রি করবেন।