জমির দলিলে ভুল সংশোধন [নতুন নিয়মে] আবেদন খরচ কত জেনে নিন

জমি বেচা কেনার ক্ষেত্রে জমির দলিল হচ্ছে একটি সরকারি প্রমান পত্র। অনেকেই জমি কিনার সময় যখন দলিল করেন তা লেখকের কাছে অনিচ্ছা কৃত ভূল তথ্য কারনে লিখার সময় ভূল হয়ে যায়। এই ভূল দলিলে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে রেজিষ্ট্রি হয়ে যায় তখন সাধারণ নাগরিকরা মনে করে যে একবার একটি জমির দলিল ভুল হলে তা সংশোধন করা যায় না। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।

জমির দলিলের ভুল সংশোধন সহজ নিয়ম জেনে নিন

কীভাবে একটি জমির দলিলের ভুল সংশোধন করা যায়। তা নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এই পোষ্টটি সম্পুরন পডে আপনি সহজেই জমির দলিল সংশদন করতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন যাহাতে দলিল ভূল না হয় তাই দলিল লেখক কে আপনি সঠিক তথ্য দিন এবং ভালো দলিল লেখক দিয়ে আপনার দলিল লিখালে এই সকল ভূল হবার সম্বাবনা কমে যায়।

মনে রাখবেন দলিল যেহেতু সরকারি সম্পত্তি তাই আপনি নিজে বা কারো মাধ্যমে কোন ধরনের ঘষা মাজা করা যাবে না। এক মাত্র এসি লেন্ড বা আদালত থেকে আপনাকে সংশোধন করে দিবে।

দলিল সংশোধনের উপায়

দলিল রেজিস্ট্রির পরে দাগ, খতিয়ান, মৌজা, চৌহদ্দি বা নামের বানানে কোনো ভুল পাওয়া গেলে সাধারণত ৩ বছরের মধ্যে দলিল সংশোধনের জন্য দেওয়ানী আদালতে মামলা করতে হয়। তিন বছর পর, এই ধরনের মামলা অবহেলার জন্য খারিজ করা হয়। সেক্ষেত্রে রিভিশন মামলা করা যাবে না, তবে ঘোষণামূলক মামলা করা যাবে। এক্ষেত্রে আদালত কর্তৃক প্রদত্ত মামলার রায় হল সংশোধনী দলিল। আদালত থেকে রায়ের একটি প্রত্যয়িত অনুলিপি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো হলে, সাব-রেজিস্ট্রার উক্ত রায়ের আলোকে সংশ্লিষ্ট ভলিউম সংশোধন করবেন। এই ক্ষেত্রে, কোন নতুন দলিল প্রয়োজন নেই.

জমির দলিলের ভুল সংশোধন উপায় পিডিএফ

এসল্যান্ড বা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিলতে ছোটখাটো ভুল সংশোধন

সাব-রেজিস্ট্রার দ্বারা সংশোধন: দলিল নিবন্ধনের পরে, যদি দলিল, খতিয়ান বা নামে কোনো ছোটখাটো ভুল পাওয়া যায় এবং ভুল সংশোধনের ফলে দলিলের মূল কাঠামো বা শিরোনাম পরিবর্তন না হয়, তাহলে দলিলের সাথে একটি আবেদন করা যেতে পারে। সাব-রেজিস্ট্রার। সাব-রেজিস্ট্রার এ ধরনের ছোটখাটো ভুল সংশোধন করতে পারেন।

জমির দলিলের ভুল সংশোধন ভূমি অফিস থেকে যেভাবে করবেন

দলিল অফিসিয়াল মডেল অনুসরণ করে দলিলটি প্রস্তুত করা হলে, ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। যদি দলিলটি সত্যায়িত হয় বা দলিলটি একাধিক ব্যক্তি দ্বারা প্রুফরিড করা হয় তবে কোনও বড় ভুল নেই দক্ষ এবং অভিজ্ঞ দলিল লেখক নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার জমির দলিল তালিকাভুক্ত কিনা তা পরীক্ষা করুন।

দলিল সংশোধন ফি

দলিলের উভয় পক্ষকেই সাব-রেজিস্ট্রারের অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে, যেখানে দলিলটি পূর্বে নিবন্ধিত ছিল। সমস্ত সহায়ক নথি সহ নথি সংশোধনের জন্য অফিসারের কাছে একটি আবেদন জমা দিতে হবে। মূল নথিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে, সংশোধনী দলিলের নিবন্ধনের জন্য উভয় পক্ষকেই দুজন করে সাক্ষী পেতে হবে।

ভ্রম সংশোধন দলিলের রেজিস্ট্রি খরচ

রেজিস্ট্রেশন ফি: ১০০ টাকা
স্ট্যাম্প শুল্ক: ৩০০ টাকা (১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প আইনের ১ নং তফসিলের তফসিল নং ৫ এ বর্ণিত)।
এছাড়াও আপনার যা দরকার তা হল-
১। ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা।
২। ই-ফি- ১০০ টাকা।
৩। এন ফি
ক) বাংলায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দের পৃষ্ঠা বা তার অংশের জন্য ১৬ টাকা।
খ) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দের পৃষ্ঠা বা তার অংশের জন্য ২৪ টাকা।
৪। (কপিস্টদের পারিশ্রমিক)
NN ফি:-
ক) বাংলায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দের পৃষ্ঠা বা তার অংশের জন্য ২৪ টাকা।
খ) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দের পৃষ্ঠা বা তার অংশের জন্য ৩৬ টাকা।

দলিল লেখার সময় ক্রেতার যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত:

দলিল লেখার সময় ক্রেতার যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে তা এখানে বিস্তারিত ধারনা দেওয়া হয়েছে আশা করি আপনারা এই সব নিয়ম মেনে আপনাদের দলিল সম্পাধন করবেন।

দলিল সংশোধনের ফরম নমুনা ডাউনলোড

১। দলিল সম্পাদনকারী ব্যক্তি এবং জমি দাতা (বিক্রেতা) আইনের দৃষ্টিতে নাবালক এবং সুস্থ মনের কিনা তা যাচাই করা উচিত।
.২। পুরানো দলিল এবং নতুন দলিল বিভিন্ন স্থান যেমন-

(ক) শিরোনাম

(খ) স্পষ্ট বিল

(গ) বায়না অর্থ ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে।

৩। ক্রয়কারী কর্তৃক ক্রয় করার জন্য প্রস্তাবিত জমির পরিমাণ বিক্রয় মূল্য (ডিডের ক্ষেত্রে, প্রদেয় পরিমাণ এবং দলিলের ক্ষেত্রে বকেয়া অবশিষ্ট) পক্ষগুলির সনাক্তকরণ- (১) দলিল প্রাপক (২) দলিল অনুদানকারী বা (ক) প্রথম পক্ষ ( খ) ) দ্বিতীয় পক্ষ উভয় পক্ষের পূর্ণ নাম, ঠিকানা, পেশা, ধর্ম ইত্যাদি

মালিকানার বিবরণ:

জমি দাতার মালিকানার ভিত্তি, পূর্বের দলিল নম্বর এবং তারিখ পরচা/খতিয়ান ইত্যাদি।

৪। জমির বিক্রেতা যদি উত্তরাধিকারসূত্রে জমি পেয়ে থাকেন, তাহলে মূল মালিকের সঙ্গে বিক্রেতার সম্পর্ক সঠিক।
৫। দলিলে প্রস্তাবিত জমির বিবরণ যেমন জেলার নাম, উপজেলার নাম, রেজিস্ট্রি অফিসের নাম, মৌজার নাম, দাগ নং খতিয়ান নং জমি কোন শ্রেণীভুক্ত যেমন ভিটা, বা ডালা, বা ডাঙ্গা বা জলাভূমি দেখা।

৬। ক্রেতা যে জমি ক্রয় করতে চান তার সীমানা সঠিক কিনা যেমন উত্তর, দক্ষিণ পূর্ব, পশ্চিম দিক মালিকের নামের সাথে উল্লেখ করতে হবে।
৭। জমির বিক্রেতা বা দলিল দাতা দলিলের ১মপৃষ্ঠার উপরের ডানদিকে নীচে থেকে উপরে পর্যন্ত তার নাম স্বাক্ষর করবেন বা নিরক্ষর হলে তিনি দেখতে পাবেন যে তিনি তার নাম স্বাক্ষর করেছেন। এছাড়াও জমি বিক্রেতা বা দাতাকে দলিলের শেষ পৃষ্ঠার নীচে স্বাক্ষর বা টিপ দিতে হবে। যাইহোক, ডকুমেন্টের প্রতিটি পৃষ্ঠায় দাতার চিহ্ন বা টিপ থাকা ভাল।।

৮। উল্লিখিত দলিলের লেখক দলিলের শেষ পৃষ্ঠার নীচে তার নাম স্বাক্ষর করবেন যেখানে জমির বিক্রেতা তার নাম স্বাক্ষর করেছেন বা টিপ দিয়েছেন; তারপর কমপক্ষে ২জন সাক্ষী এবং অন্য একজন ব্যক্তি জমির বিক্রেতাকে শনাক্ত করবেন এবং স্বীকৃতিদাতা হিসাবে স্বাক্ষর করবেন।
৯। দলিলতে, যতদূর সম্ভব, বিভ্রান্তি, অস্পষ্টতা এবং অস্পষ্টতা এড়ানো উচিত, তবে যদি কোনও ভুল হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে, দলিল লেখককে দলিল শেষে একটি ক্ষমাপ্রার্থনা লিখতে হবে, উল্লেখ করে অস্পষ্টতা বা অস্পষ্টতার সাথে যুক্ত শব্দ এবং লাইনের ক্রম।
১০। জমির তফসিল লেখার সময়, প্রতিটি প্লটে মোট জমির পরিমাণ এবং বর্তমান বিক্রয় দলিতে দেওয়া জমির একর বা শতাংশ প্রতিটি ক্ষেত্রে লিখতে হবে। কিভাবে