শবে কদর বাংলা অর্থ সহ নামাজের দোয়া, মোনাজাত, ইবাদত ও ফজিলত দেখুন ২০২৪

শবে কদর একটি সাধারণত মুসলিম মুমিন সকল বান্দাদের কাছে প্রবিত্র রাত যা ইসলামিক ক্যালেন্ডারের রমজান মাসের শেষ দশম বিজোড় দিন থেকে শুরু হয়। আসলে শবে কদরের প্রকৃত তারিখ জানা অসম্ভব, কারণ ইসলামিক ক্যালেন্ডার চান্দ্র নির্ভর। চান্দ্র নির্ভর কারণে, মাহাজার সময় ও দিন সবসময় পরিবর্তন করে। শবে কদর এর অর্থ হচ্ছে ভাগ্য রজনী।

সুরা কদর এর অর্থ সহ দেখুন এখানে

তবে, শবে কদর রাত্রি একটি পবিত্র রজনী, যা সাধারণ রননী চেয়ে বেশি উত্তম হয়। ইসলামিক দর্শন অনুযায়ী, আল্লাহ পাক তাঁর রহমত এবং ক্ষমার একটি বিশেষ দিন শবে কদর এবং শবে কদরের রাত্রির মাধ্যমে মুসলিমদের জন্য অসংখ্য বেশি সুযোগ প্রদান করেন।

লাইলাতুল কদর নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া

শবে কদর রাতে নামাজ এর নিয়ম

১। শবে কদর নামাজ অধিকতর সময় নিয়ে পডা উচিৎ। অধিকতর মানে হলো নামাজের কে বেশি গুরুত্বসহকারে শবে কদর নামাজ শুরু করতে হবে।

২। নামাজের সময় অবশ্যই ওযু করতে হবে। ওযু করার সময় একটি নির্দিষ্ট দোয়া করতে হবে।

৩। শবে কদর নামাজের প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে এবং এর পরে কোন একটি সূরা পড়তে হবে। দ্বিতীয় রাকাতে প্রথম রাকাতের মতোই নিলম্বিত হতে হবে।

৪। শবে কদর নামাজে নফল সালাতের মতো দুটি রাকাত হবে। প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে এবং এর পরে অন্য কোন একটি সূরা পড়তে হবে।

৫। শবে কদর নামাজ রমজান মাসের ২৬ তারিখ রাতে হয়ে থাকে এবং এই রাতে  যত খুশি নফল ইবাদত করতে পারেন।

লাইলাতুল কদর নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া

শবে কদর রাতে নামাজ নিয়ত দোয়া ও মোনাজাত?

শবে কদর রাতে নামাজের নিয়ত ও দোয়া নিম্নলিখিত ভাবে হবে:

নামাজের নিয়ত:  শবে কদর রাতে ২ রাকাত নফল নামাজ পড়ার জন্য আপনাকে প্রথমে নিয়ত করতে হবে । যে কোন নামাজের জন্য নিয়ত করতে হয়

নিয়ত করার জন্য আপনার নিয়ত শুধুমাত্র একটি অংশ হতে হবে এবং তা হবে: “নিয়ত করছি শবে কদর নফল নামাজ পড়ার জন্য ।”

আরবি উচ্চারণঃ “নাওয়াই তুআন আদায়া শাবে কাদরি সালাতিল নাফিলাতি রাকাতায়ন।এরপর নফল নামাজ শুরু করতে পারেন।

শবে কদর রাত্রি দোয়া

নামাজের দোয়া: শবে কদর নামাজের দোয়াটি হলঃ “আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা আফুওন তুহিব্বুল আফওয়াফা ফাফু আন্নী।”

এছাড়া শবে কদরের রাতে মুসলিমদের মোনাজাত ও দু’আর জন্য এই রাতের ইবাদত সমূহ দেখা যেতে পারে। মোনাজাত করার সময় মুসলিমদের চারকুল সূরা পড়া হয়, এগুলো হলঃ সূরা ইখলাস ১০ বার, সূরা কাফিরুন ৩ বার, সূরা ফালাক ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার এবং তাওবা শরীফের দু’আ।

যে দু’আ বেশি বেশি আমল করবেন।

সূরা দুখানের আয়াত ১২ এটি অনুবাদকের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করে দিচ্ছে। সঠিক অনুবাদ হল:

رَبَّنَا اکْشِفْ عَنَّا الْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُونَ

রাব্বানা আকশিফ আন্না লায়েলুক ইয়াকা ইন্না মুমিনুন।

অর্থাত্‌, “হে আমাদের রব, আমাদের উপর পাঠানো আয়াবকে দূর কর। নিশ্চয়ই আমরা মুমিন।”

সূরা মুমিনুনের আয়াত ১০৯ এর সঠিক অনুবাদ হল:

رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

রাব্বানা আমান্না ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়াংতা খাইরুর রাহিমীন।

এর অর্থ হল, “হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, তাই আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন এবং আপনি আমাদের উপর রহম করুন। আপনি রহমতশীল লোকের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।”

শবে কদর রাত্রি মোনাজাত অর্থ সহ 

لا إلهَ إلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ، يُحْيِي وَ يُمِيْتُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ الْجَهْدِ وَالْبُخْلِ وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ.

এর বাংলা অনুবাদঃ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুল্কু ওলাহুল হামদু, যুহী ওয়া ইয়ুমীতু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা লাইলাতুল কদরি ওয়া আউয়ুয়া বিকা মিনাল জাহদি ওয়াল বুখলি ওয়া সাইবাদিল দ্যাইনি ওয়া কহরি আর-রিজালি।

অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি এক একটি। তিনি কোনো সঙ্গী নেই, তিনি সব কিছুর মালিক এবং তিনি সর্বশক্তিমান। তিনি জীবন এবং মৃত্যুর ক্ষমতার মালিক এবং তিনি সর্বস্বত্বের মালিক। হে আল্লাহ, আমি শবে কদরের রাতটি আপন থেকে অনুগ্রহ করে চাই এবং আপনার নিকট থেকে অসুখ এবং দারিদ্র্য, ঋণের আঘাত এবং মানুষের অত্যাচার থেকে আশ্রয় চাই।

আরো দেখুনঃ লাইলাতুল কদর নামাজ পড়ার নিয়ম, দোয়া ও ফজিলত। মাহে রমজান ২০২৩

সুরা কদর এর অর্থ সহ দেখুন এখানে

সুরা কদর কুরআন শরীফের একটি সুরা হয়। এটি কুরআনের ৯৭তম সুরা এবং মক্কায় অবস্থিত। এই সুরাটির নাম হলো “কদর” যা আরবি ভাষায় “মহত্তম নজরানির রাত” অর্থ করে।

সুরা কদর আল্লাহর রহমত, করুণা এবং বরকত সম্পর্কে কথা বলে। এই সুরাটি ইসলামিক ইবাদতে অনেক গুরুত্ব রাখা হয়, কেননা এই সুরাটি কুরআন শরীফে উল্লেখিত সবচেয়ে মহত্তম রাত সম্পর্কে বলা হয়েছে। ইসলামিক ইবাদতে এই রাতটি খুব বেশি মুখ্য এবং বরকতময় হয়।

এই সুরাতে আল্লাহর রহমত, করুণা এবং বরকত সম্পর্কে কথা বলা হয়েছে এবং মুসলিমদের জন্য একটি প্রস্তাব করা হয়েছে যে, তারা এই রাতে ইবাদত করে অধিক আজর লাভ করতে পারে।

অর্থঃ

  • আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে।
  • শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন?
  • শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ
  • এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।
  • এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

শবে কদর রাত্রি ইসলামিক ক্যালেন্ডারের

শবে কদর রাত্রি ইসলামিক ক্যালেন্ডারের রমজান মাসের শেষ দশদিন বেশি পর পর পালিত হতে পারে, যার প্রকৃত তারিখ অনিশ্চিত থাকে। তবে, বিশেষ পরিশ্রম করে প্রাপ্ত ধর্মীয় জ্ঞান এবং পরম্পরাগত থাকতে হবে।  শবে কদর ইসলামিক ক্যালেন্ডারের পবিত্র মাহের নাম। এই মাহে মুসলমানরা পুরো মাহটি পরিশুদ্ধ রাখে এবং রাত্রি গুলি বেশি ইবাদত করে।

শবে কদর ইসলামিক ক্যালেন্ডার সময়সূচী

শবে কদর মাহের ২৭তম রাত, যা লেইলাতুল কদর নামে পরিচিত, ইসলামিক ইতিহাসের সবচেয়ে মৌল্যবান রাত্রি হিসাবে পরিচিত। এই রাত্রিতে আল্লাহ পাক তাঁর বান্দাদের সকল দোয়া কবুল করেন এবং মনোযোগী মুসলিমদের অনেক বেশি সুযোগ প্রদান করেন। শবে কদর রাত্রি একটি অত্যন্ত মৌল্যবান রাত্রি যার বেশি ইবাদত করা হয়। ইসলামিক দর্শন অনুযায়ী, এই রাত্রিতে কোন একটি দোয়া পড়লে তা হাজাত সহজেই কবুল হয়ে যায়। এই রাত্রিতে মুসলিমদের মধ্যে সদাচার ও করুণাময় মাহৌল তৈরি হয়।